AD: আল্লাহর জন্যই ভালবাসা এবং আল্লাহর জন্যই ঘৃনা করা পর্ব (২)
ওমর ফারুখ
http// nahid786.xtgem.com
ইবনে শায়বা বলেন যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ " ঈমানের দৃঢ়তম বন্ধন হলো শুধুমাত্র তাঁরই জন্য ভালবাসা এবং তাঁরই জন্য শত্রুতা৷ " (তাবারানী, আল কবির, ইবনে শায়বা এটা ইবনে মাসউদ থেকে মারফু রূপে বর্ণনা করেছেন এবং এটা হাসান রূপে আখ্যায়িত করেছেন) ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ " ঈমানের দৃঢ়তম বন্ধন হচ্ছে আল্লাহর জন্য আনুগত্য এবং তাঁর জন্য বিরোধিতা , আল্লাহর জন্য ভালবাসা এবং তাঁর জন্য শত্রুতা৷ " (আত তাবারানী, আল কাবির৷ সুয়ূতী (রহঃ) এটা তাঁর আলজামি আসসাগীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং আলবানিএটিকে হাসান আখ্যা দিয়েছেন) ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেছেন, " যে আল্লাহর জন্য ভালবাসে এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে , এবং যে আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব নষ্ট করে অথবা তার জন্য শত্রুতা ঘোষণা করে , সে আল্লাহর কাছ থেকে নিরাপত্তা পাবে৷ এটা ছাড়া কেউ প্রকৃত ঈমানের স্বাদ পাবে না , যদিও তার সওম ও সালাত অনেক হয়৷ মানুষ দুনিয়াবী বিষয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলে , যা তাদেরকে কোন উপকারই করতে পারবে না৷ " (ইবনে রজব আল হাম্বালী,জামি আল উলূমওয়াল হাকিম, পৃঃ৩০) শাঈখ সুলাইমান বিন আব্দুলাহ কর্তৃক_'আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব নষ্ট করা' এই কথাটির ব্যাখ্যায় বলেন যে, এটি আল্লাহর জন্য ভালবাসার ও বিশ্বস্ততারসম্পর্ক গড়েতোলায় আবশ্যকতা নির্দেশ করে, এটাই আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব৷ এটা আরও নির্দেশ করে যে, সাধারণ আবেগ বা অনুভূতি এখানে যথেষ্ট নয়; এখানেযা বুঝানো হয়েছে তা হচ্ছে ভালবাসা মৈত্রীর উপর প্রতিষ্ঠিত৷এটা সাহায্য,সম্মান এবং ভক্তির অপরিহার্যতা নির্দেশ করে৷ এটার অর্থ তাদের সাথে থাকাযাদেরকে সে কথায় ও কাজে ভালবাসে৷'আল্লাহর জন্য শত্রুতা' এটি আল্লাহর জন্য শত্রুতার আবশ্যকতা নির্দেশ করে যা আল্লাহর জন্য বিরোধিতা৷ এটা কাজেরমাধ্যমে তাদের সাথেবিরোধিতা ঘোষণা করা, তাঁর(আল্লাহর) শত্রুদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করা,তাদেরকে পরিত্যাগ করা এবংকথা ও কাজের মাধ্যমে তাদেরথেকে দূরে থাকা৷ এটাপ্রমাণ করে যে, সাধারণ বিরোধিতা যথেষ্ট নয় এবং এটা তোমার প্রতিশ্রতির প্রতি পূর্ণসম্মান প্রদর্শন, কারণ আল্লাহ বলেনঃ"তোমাদেরজন্য ইব্রাহীম (আঃ) ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ৷ যখন তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তেযার ইবাদত কর তাদের সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই৷ আমরা তোমাদেরকে মানি না৷ তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালেরজন্য; যদি না তোমরা এক আল্লাহতেঈমান আন৷" (সূরা মুমতাহিনা ৬০: ৪) এই সব হলো আমাদের এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাব যে , আল্লাহর আনুগত্যের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে আল্লাহকে ভালবাসা এবং তাঁর দ্বীনের সাহায্যে এগিয়ে আসা;তাদেরকে ভালবাসা যারা তাঁর (আল্লাহর) প্রতি আনুগত্যপরায়ণ এবং তাদেরসাহায্যে এগিয়ে আসা৷ আল্লাহর জন্য বিরোধিতা হচ্ছে আল্লাহর শত্রুদেরব্যপারে ক্রোধান্বিত হওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা, এই কারণে আল্লাহ প্রথম দলটিকে 'আল্লাহর দল'এবং দ্বিতীয় দলটিকে 'শয়তানের দল'বলেছেনঃ"যারা ঈমান আনেআল্লাহ তাদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান৷ আর যারা কুফরীকরেতাগুত তাদের অভিভাবক, এরা তাদেরকে আলো হতে অন্ধকারেনিয়ে যায়৷ এরাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে৷" (সূরা বাকারা ২:২৫৭)এবং আল্লাহ বলেনঃ " যারা মু'মিন তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে এবং যারা কাফিরতারা তাগুতের পথে যুদ্ধ করে৷ সুতরাং তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধেযুদ্ধ কর; শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল৷" (সূরা নিসা ৪: ৭৬) এটা সুবিদিত যে, যখনই আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য সাধনার্থে কোন নবী প্রেরণ করেছেন , তখনই তাদের ( নবীদের ) বিরুদ্ধাচরণকারীদেরও তিনি ( আল্লাহ ) প্রস্তুত করেছেন৷ *. আল্লাহ বলেনঃ"এইভাবেই আমি মানুষ ও জিনের মধ্যে শয়তানদেরকেপ্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি, প্রতারণার উদ্দেশ্যে তাদের একে অন্যকে চমকপ্রদ বাক্যদ্বারা প্ররোচিত করে৷ যদি তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করতেন তবে তারা এসব করতো না; সুতরাং তুমি তাদেরকে ও তাদের মিথ্যা রচনাকে বর্জন কর৷" (সূরা আন'আম ৬: ১১২) হতে পারে যে, এই সমস্ত ঐশী বাক্যের বিরুদ্ধাচরণকারীরা অহীর কিছু অংশ আয়ত্ত করেছে এবং সাথে কিছু প্রমাণাদিও আছে৷ *. যেমন আল্লাহ বলেনঃ"তাদের নিকটযখন স্পষ্টনিদর্শনসহ তাদের রাসূল আসতেন তখন তারা নিজেদেরজ্ঞানের দম্ভ করত৷ তারাযা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপকরত তাই তাদেরকেবেষ্টন করবে৷" (সূরা মু'মিন ৪০: ৮৩) প্রত্যেক মুসলমানের জন্যআল্লাহর দ্বীন শিক্ষা করাআবশ্যকীয় যা তার জন্য একটি মারণাস্ত্র হিসাবে শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে সংগ্রামকরতে সাহায্য করবে৷ এটাতে তার কোন ভয় ও আশংকা থাকবে না,যেহেতু শয়তানের কৌশল সব সময় দুর্বল৷ আল্লাহ বলেনঃ " অবশ্যই আমার বাহিনীই বিজয়ী৷ " (সূরা সাফ্ফাত ৩৭: ১৭৩) আল্লাহর সাহায্যকারীদের বিজয় হতে পারে কথাবার্তায়, বিতর্কে, তেমনি যুদ্ধ ও শত্রুতায়৷এইভাবে এক ইলাহর দল থেকে একজনসাধারণ মানুষও কাফেরদের হাজারও জ্ঞানীদের বিরুদ্ধে জয়ীহতে পারে (কাশফ আশ-সুবুহাত, আব্দুল ওহ্হাব, তৃতীয় সংস্করণ-পৃঃ ২০)
Created at 2012-10-27 15:38
Back to posts